আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় (২ আগস্ট ১৮৬১-১৬ জুন ১৯৪৪) প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ, বিজ্ঞানশিক্ষক, দার্শনিক ও কবি। তিনি বেঙ্গল কেমিক্যালের প্রতিষ্ঠাতা এবং মার্কিউরাস
নাইট্রাইটের আবিষ্কারক। এ ছাড়া তিনি ১২টি যৌগিক লবণ এবং ৫টি থায়োএস্টার আবিষ্কার করেন। জন্ম অবিভক্ত বাংলার খুলনা জেলার পাইকগাছার রাডুলি গ্রামে। প্রফুল্লচন্দ্র রায় শুধু বিজ্ঞানীই ছিলেন না, ছিলেন একজন শিল্পোদ্যোক্তা, সমাজ সংস্কারক, বিজ্ঞানশিক্ষক, দার্শনিক, কবি, শিক্ষানুরাগী, ব্যবসায়ী ও বিপ্লবী দেশপ্রেমিক। ১৮৮৯ থেকে ১৯১৬ সাল পর্যন্ত কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের শিক্ষক ছিলেন। ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। এ ছাড়া লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মহীশুর ও বেনারস বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৮৮৫ সালে India Before and After the Sepoy Mutiny এবং ভারত বিষয়ক বিভিন্ন নিবন্ধ লিখে ভারতবর্ষ এবং ইংল্যান্ডে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
মাত্র ৮০০ টাকা পুঁজি নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস, যা ১৯০১ সালে কলকাতার মানিকতলায় ৪৫ একর জমিতে স্থানান্তরিত হয়। তিনি খুলনায় প্রতিষ্ঠা করেন এপিসি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি ও এপিসি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড (পরবর্তীতে খুলনা টেক্সটাইল মিলস)। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমিদারি সম্পত্তি ও সমুদয় উপার্জিত অর্থ তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে, ছাত্রবৃত্তি ও জনহিতকর কাজে দান করে গেছেন। বাগেরহাটের পিসি কলেজ তারই কীর্তি। সাতক্ষীরার চম্পাপুল স্কুলও তাঁর অর্থানুকূল্যে প্রতিষ্ঠিত। খুলনার বিএল কলেজ, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল মেডিকেল কলেজ, বরিশালে অশ্বিনী কুমার ইনস্টিটিউশন, যাদবপুর হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালসহ বহু প্রতিষ্ঠানে তিনি আর্থিক অনুদান দিয়েছেন।