Image Description

সিয়েরা লিয়ন: সাদা কাক ও কালো মানুষের গল্প

৳380
Format Paperback
Language Bangla
ISBN 978 984 20 0299-1
Edition 2nd
Pages 200

হিলারী ক্লিনটন বলেছিলেন, বর্তমান বিশ্বের মানুষ বাংলাদেশকে চেনে প্রধানত দু’টি কারণেÑ এক. গ্রামীণ ব্যাংক আর দুই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের ভূমিকা। সেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্যেই কর্নেল আশরাফ গিয়েছিলেন সিয়েরা লিওন। তিনি ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং একটি দল কন্টিনজেন্টের উপ-অধিনায়ক। গিয়েছিলেন সেই শুরুর দিকে এবং কাটিয়ে এসেছেন পুরো একটি বছর যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত দেশটিতে। ওইটুকু সময়ের মধ্যে আপন পরিবৃত্তে দেখা ঘটনাবলী ও সমাজ-চিত্রকে তিনি এই গ্রন্থে দৃশ্যায়িত করেছেন নিজস্ব-ভঙ্গিমায়। অন্য অনেকের মতো তিনিও খুব কাছে থেকে দেখেছেন সেদেশের মানুষকে, অত্যন্ত দরদ দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করেছেন ওই ভিন সমাজের ক্ষতচিহ্নগুলোকে আর ব্যথিত হয়েছেন মানুষ ও মানবতার দুর্দশা দেখে। দীর্ঘ এক বছর ধরে সেনা সদস্যরা কি কি কাজ করেছেন তার অনুপুঙ্খ বর্ণনা এতে নেই, তবে কিছু দুর্লভ ঘটনা ও বিষয়ের বর্ণনা তিনি দিয়েছেন যা থেকে সে দেশের মানুষের মানস ও সমাজের একটি বাস্তব বিশদ চিত্র অঙ্কন করা যায়। কর্নেল আশরাফ সিয়েরা লিওনকে বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের মধ্যে এক চমকপ্রদ ও ভিন্ন মাত্রায় পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। ১৯৮৮ সালে শুরু করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ যাবৎ মোট ত্রিশটি দেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের যোগ দিতে সেনা সদস্যদের পঠিয়েছে। এর মধ্যে মোট চৌদ্দটি দেশের পাটিয়েছে সৈন্যদল। এই কার্যক্রমে এ পর্যন্ত প্রায় একত্রিশ হাজার সেনা সদস্য অংশগ্রহণ করেছেন। পঞ্চমুখে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের কাজের প্রশংসা করেছে সারা বিশ্ব। বাংলাদেশের সুনাম বেড়ে গেছে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষের কাছে। এতে আর্থিক সাচ্ছন্দ্য লাভ করেছেন ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক সেনা সদস্য এবং বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে বাংলাদেশ সরকার। তবে এতে ত্যাগের পরিমাণটি অপূরণীয়। মোট ৪৮ জন সেনা সদস্য এই কার্যক্রমে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকেই। সিয়েরা লিওনে পরিচালিত হয়েছে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ পারিচালিত অন্যতম সফল কার্যক্রম। বাংলাদেশী সেনাদল ছিল এর অন্যতম প্রধান প্রাণশক্তি। বাংদেশীদের আন্তরিকতা ও ত্যাগী মনোভাবে মুগ্ধ হয়েছে সে দেশের আপামর জনসাধারণ। বলা যায় বাংলাদেশীরা সে দেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। সেই প্রেক্ষিতে এই গ্রন্থের মূল্য অনন্য।

Ashraf Al Deen / আশরাফ আল দীন

পশ্চিম আফ্রিকার প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ সিয়েরা লিয়ন এক দশক স্থায়ী গৃহযুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত হয়। নিহত ও আহতদের বাদ দিয়েও সে দেশের বিপুল সংখ্যক শিশু-কিশোরের জীবন বিপর্যস্ত ও তছনছ হয়ে পড়ে। কারণ তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে চাইল্ড সোলজার বা শিশু সৈনিকে পরিণত হয়েছিল। অবুঝ নির্মমতায় তারা অত্যাচার চালিয়েছে অন্যদের ওপর, আবার নিজেরাও হয়েছে নিষ্ঠুরতার শিকার। যুদ্ধশেষে সকল প্রকার ফায়দা লুটেছে বড়রা। কেবল চাইল্ড সোলজাররাই ফিরে যেতে পারেনি জীবনের স্বাভাবিকতায়। ওরা বঞ্চিত হয়েছে নানাভাবে। সিয়েরা লিয়নের আইভান মাত্র দশ বছর বয়সেই যুদ্ধের আবর্তে জড়িয়ে পড়েছিল চাইল্ড সোলজার হিসেবে। সশস্ত্র যুদ্ধের সব ধরনের অমানবিকতা ও নৃশংসতার অভিজ্ঞতা অর্জন করে সে। অবশেষে বিশ বছর বয়সে যুদ্ধাহত হয়ে সে ছিটকে পড়ে জীবনের সব স্বস্তি থেকে। শেষ পর্যন্ত কী প্রতিদান পেল সে? এরই পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আইভান রজার্সের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ দ্য চাইল্ড সোলজার। অনুবাদক আশরাফ আলী দীনের জন্ম চট্টগ্রামে, ২রা মে ১৯৫৪ সালে। তিনি মূলত কবি ও ছড়াকার। তার কাব্যগ্রন্থ নির্জন এসেছিল আজ প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে এবং রাত বাড়তে থাকে ১৯৯০-এ। পত্রপত্রিকায় তার বেশ কিছু গল্প ও অনুবাদ-সাহিত্য প্রকাশিত হয়েছে। তিনি গবেষণাকর্মেও সম্পৃক্ত। ভ্রমণ করেছেন ভারত, সৌদি আরব, চীন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সিয়েরা লিন, সেনেগাল যুক্তরাজ্য। চাইল্ড সোলজারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের পাশাপাশি এ বিষয়ে নানামুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ হয়েছে তার। এই গ্রন্থ রচনা সেই অভিজ্ঞতারই প্রত্যক্ষ ফসল।