স্বাতি এক নক্ষত্রের নাম
গল্পের বড় গুণ হলো কৌতূহল সৃষ্টি করা, ছোটগল্পও তা-ই করে। পাঠক হিসাবে আমরা গল্পের পরিণতিটা জানতে চাই, এবং পরিণতি অনেক সময়েই বিস্ময়ের সৃষ্টি করে থাকে; কিন্তু ওই বিস্ময়টা অস্বাভাবিক ঠেকে না, কেননা সেটা গল্পের ভেতর থেকেই বের হয়ে আসে। ছোটগল্পে গল্পের এই কৌতূহলের সঙ্গে আরো কিছু থাকে, সে হলো চরিত্র। পরিসরে ছোট অবশ্যই, কিন্তু তার ভেতরেই নায়ক-নায়িকারা বেশ প্রত্যক্ষ হয়ে ওঠে। আর থাকে সামাজিক ইতিহাস; ইতিহাস থাকে বলেই ছোটগল্পকে আমরা রূপকথা মনে করি না, তাকে বাস্তবিক বলে মেনে নিই। মোমিনুল হকের গল্পগুলোতে ছোটগল্পের এই তিনটি গুণই খুব সুন্দরভাবে উপস্থিত রয়েছে। ... মোমিনুল হক বেশি কথা বলেন না; তাঁর লেখায় না আছে আড়ম্বর, না অপচয়। গল্প বলার ভঙ্গিতেও হয়তো অভিনবত্ব নেই। কিন্তু তাঁর ভাষা সাবলীল, স্বাভাবিকভাবে চলে, এবং আমাদেরকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। তাঁর উপমাগুলো চমৎকার। তিনি তাঁর চরিত্রগুলো থেকে দূরত্ব রেখে চলেন, ভাবালু হবার ব্যাপারে তাঁর স্বাভাবিক অনীহা রয়েছে। কিন্তু তাই বলে তিনি যে নিস্পৃহ তা মোটেই নন। গল্পের সেই মানুষগুলোর জন্য তাঁর রয়েছে বিশেষ সহানুভূতি, যারা নানাভাবে পীড়িত ও লাঞ্ছিত হচ্ছে; কিন্তু পরিপূর্ণভাবে বাঁচার জন্য যাদের ভেতরে বিদ্যমান অদম্য আগ্রহ। ...