Image Description

স্বাতি এক নক্ষত্রের নাম

৳250
Format Paperback
Language Bangla
ISBN 984 70169 0049-5
Edition 1st
Pages 160

গল্পের বড় গুণ হলো কৌতূহল সৃষ্টি করা, ছোটগল্পও তা-ই করে। পাঠক হিসাবে আমরা গল্পের পরিণতিটা জানতে চাই, এবং পরিণতি অনেক সময়েই বিস্ময়ের সৃষ্টি করে থাকে; কিন্তু ওই বিস্ময়টা অস্বাভাবিক ঠেকে না, কেননা সেটা গল্পের ভেতর থেকেই বের হয়ে আসে। ছোটগল্পে গল্পের এই কৌতূহলের সঙ্গে আরো কিছু থাকে, সে হলো চরিত্র। পরিসরে ছোট অবশ্যই, কিন্তু তার ভেতরেই নায়ক-নায়িকারা বেশ প্রত্যক্ষ হয়ে ওঠে। আর থাকে সামাজিক ইতিহাস; ইতিহাস থাকে বলেই ছোটগল্পকে আমরা রূপকথা মনে করি না, তাকে বাস্তবিক বলে মেনে নিই। মোমিনুল হকের গল্পগুলোতে ছোটগল্পের এই তিনটি গুণই খুব সুন্দরভাবে উপস্থিত রয়েছে। ... মোমিনুল হক বেশি কথা বলেন না; তাঁর লেখায় না আছে আড়ম্বর, না অপচয়। গল্প বলার ভঙ্গিতেও হয়তো অভিনবত্ব নেই। কিন্তু তাঁর ভাষা সাবলীল, স্বাভাবিকভাবে চলে, এবং আমাদেরকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। তাঁর উপমাগুলো চমৎকার। তিনি তাঁর চরিত্রগুলো থেকে দূরত্ব রেখে চলেন, ভাবালু হবার ব্যাপারে তাঁর স্বাভাবিক অনীহা রয়েছে। কিন্তু তাই বলে তিনি যে নিস্পৃহ তা মোটেই নন। গল্পের সেই মানুষগুলোর জন্য তাঁর রয়েছে বিশেষ সহানুভূতি, যারা নানাভাবে পীড়িত ও লাঞ্ছিত হচ্ছে; কিন্তু পরিপূর্ণভাবে বাঁচার জন্য যাদের ভেতরে বিদ্যমান অদম্য আগ্রহ। ...

Momin ul Hoque / মেমিনুল হক

মোমিনুল হক, জন্মস্থান বারাহিপুর, ফেনী (১৯৩৬)। তিনি স্কুল-শিক্ষা পেয়েছেন ফেনীতে এবং কলেজ-শিক্ষা পেয়েছেন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। বিজ্ঞানে স্নাতক (১৯৫৫) এবং পেট্রোলিয়াম ভূতত্ত্বে স্নাতকোত্তর (১৯৫৭) ডিগ্রি নিয়েছে যথাক্রমে ঢাকা ও পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় (লাহোর) থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও পিটর্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা-শেষে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন (১৯৬৫)। ১৯৫৫ সালে ভাষাযুদ্ধ এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে তিনি বেশ কিছুদিন ঢাকা জেলেও কাটিয়েছেন। তিনি স্টান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির পেট্রোলিয়াম ভূতাত্ত্বিক হিসেবে তৎকালীন পাকিস্তানের দুই অংশে ভূতাত্ত্বিক-জরিপে নেতৃত্ব দিয়েছেন (১৯৫৭-১৯৬১)। তিনি অধ্যাপনা করেছেন ইরাক, লিবিয়া, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে। আমন্ত্রিত অধ্যাপক হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও বক্তৃতা দিয়েছেন। যক্তরাষ্ট্র, যক্তরাজ্য, মস্কো, সিডনি ও টোকিও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনে তিনি গবেষণা-প্রবন্ধ পড়েছেন এবং বিজ্ঞান জর্নালে গবেষণা-প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি প্রকৌশল-ভূতাত্ত্বিক পেশা থেকে ২০০৭ সালে অবসর নিয়ে ফিরে যান তরুণ বয়সের সাহিত্যিক জীবনে। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘অšে¦ষণ’ ছাপা হয়েছিল ১৯৫৮ সালে। এর পর তিনি আর সাহিত্যের দুয়ারে পা দেননি। হাল আমলে তিনি লিখেছেন দুটো গল্প-সংকলন, স্বাতি এক নক্ষত্রের নাম (অ্যাডর্ন, ২০০৯) ও ফেরারি (স্বরব্যঞ্জন, ২০১০) এবং দুটো উপন্যাস, ভাটির যেদেশর যাত্রা (অ্যাডর্ন, ২০০৯) ও উৎসের সন্ধানে (স্বরব্যঞ্জন, ২০১০)। মোট তেরোটি গল্প নিয়ে আলেয়ার আলো গল্প-সংকলন। স্বদেশ ও বিদেশের পটভূমিকায় এই গল্পগুলো বিরচিত। এই গ্রন্থের কিছু গল্প বাংলাদেশের, পশ্চিমবঙ্গের ও যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।