নৈঃশব্দে তোমার পদধ্বনি
নৈঃশব্দে তোমার পদধ্বনি শোনা যায়। নিসাড়া একাকীত্বে অমর্ত্য অনুভূতির ব্যাবর্তন ঘটে আমার ক্রুশবিদ্ধ চেতনায়। অথচ তুমি তো জানো, দ্বীপান্তরিত আসামীর মতো আমরা দু’জন এখন পরিচিত পৃথিবী থেকে নির্বাসিত। সুতরাং সেই ভালো, যদি আমরা আর কখনো পেছনে ফিরে না তাকাই এবং স্মৃতির বিষধর সাপগুলোকে বিস্মৃতির সানাই বাজিয়ে সুকৌশলে বশীভূত করে ফেলি। ‘প্রত্যেক মানুষ চাঁদের মতো যার একটা অন্ধকার দিক আছে, যে দিকটা সে কাউকে দেখাতে চায়না।’ চাঁদের যেমন, মানুষের অন্ধকার দিকটাও চিরদিন অপ্রকাশিত থেকে যায় না। ‘নৈঃশব্দে তোমার পদধ্বনি’ উপন্যাসটির রচনা ও প্রকাশে আমার জীবনের অন্ধকার অধ্যায়টি চাউর হয়ে পড়লেও বুক থেকে একটা দুর্বহ বোঝা নামিয়ে দিয়েছে। অনিচ্ছে সত্ত্বেও এতে উল্লেখিত কোনো কোনো বিষয় বর্ণণায় প্রয়োজনে ঘোরপ্যাঁচ এর আশ্রয় নেয়া হয়েছে। তা না করে উপায়ও ছিলো না। আমরা যে সমাজ গড়ে তুলেছি সেখানে বিপদ এড়িয়ে বাঁচতে হলে সত্য-নির্ভরতা তেমন নয়, কূট-কৌশল অধিকতর কার্যকর। অবশ্য এ আপসকামিতার দ্বারা তথ্য বিকৃতির প্রশ্রয় দেয়া হয়নি। ‘ইতিহাস আর উপন্যাসের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। ইতিহাসের চরিত্রগুলো সত্য, ঘটনাগুলো মিথ্যে। আর উপন্যাসের চরিত্রগুলো মিথ্যে কিন্তু ঘটনাগুলো সত্য।’ ‘নৈঃশব্দে তোমার পদধ্বনি’ গ্রন্থের বিজ্ঞ পাঠকদের এ বিষয়টি মনে রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।