গ্রাস
উপকূল যেমন উপদ্রুত, ঠিক তেমনি ঐশ্বর্যশালী। 1991 সালের 29 এপ্রিল সর্বনাশী জলোচ্ছ্বাসে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়, বিলীন করে দেয় জনপদ, মানুষ হয়ে যায় অসহায়। তখন এই উপদ্রুত উপকূলে কাজ করার জন্য এগিয়ে আসে অনেক বেসরকারি সংস্থা। আসাদ ও রুহুলও এমন একটি সংস্থার পক্ষে কাজ করতে এসে নানান টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে। এই টানাপোড়েন উপাদান অফিস, সমাজবাস্তবতা, হৃদ্যতা, মানবিকতা এবং প্রকৃতি। ঘটনাবহুল এই উপন্যাসের পরতে পরতে যেমন আছে মানবিকতা, ঠিক তেমনি আছে তার বিপরীত কুৎসিত কিছু চরিত্রের রূপায়ণ। আসাাদকে কেন্দ্র করে উপন্যাসটি শেষ পর্যন্ত গড়ালেও সঙ্গে রয়েছে আরও তিনটি চরিত্র। জ গড়ালে যেমন পাথর কিংবা নুড়ির জলের সঙ্গে থাকে, ঠিক তেমনি আসাদের পথ চলাতে রুহুল আজিজ, লুনা এবং উলাফূ উপন্যাসের শরীর জুড়ে অনেক স্থানই দখল করে আছে। এরপর আরও একটি মুখ্য বিষয় হল উপকূলীয় অনেক বিষয় মানুষের অজানা রয়েছে তা রুহুল আজিজ ও আসাদের পর্যবেক্ষণমূলক অনুসন্ধানের ফলে অনেক কিছুই চিত্রিত হয়েছে যা অনেক মানুষকেই অজানাকে জানার আনন্দ দিবে। সামগ্রিক দিক থেকে উপন্যাসটি একটি জটিল পথে এগিয়েও ক্রমান্বয়ে সহজ হয়ে এসেছে যা পাঠককে অজানা কাহিনীর আনন্দের খোরাক যোগবে। আসাদ আর রুহুল মধ্য সমুদ্রের রূপ দেখার জন্য জেলেদের সঙ্গে একদিন দীর্ঘদিনের জন্য সমুদ্রপথে পাড়ি জমায়। তারপর ঝড়ের কবলে পড়ে তারা নিরুদ্দেশ হয়। তাদেরকে খোঁজে ফেরে উলাফূ। তারা ফিরে আসবে কি আসবে না এমন একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে উলাফূ দাঁড়ায় সমুদ্রের সৈকতে। সে সমুদ্রে ফুল দিয়ে তাদের জন্য প্রার্থনা করে। এই অজানা কাহিনীর মধ্য দিয়ে উপন্যাসটির পরিসমাপ্তি ঘটে।