বিশ্ব সাহিত্যে বিশ্বনবী
আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি। -আল কুরআন, সূরা ইনশিরাহ : ৪ ‘মুহাম্মদ’ নামটির অর্থ প্রশংসিত, স্রষ্টা ও সমগ্র সৃষ্টির যিনি প্রশংসা লাভে ধন্য হয়েছেন। তাঁর নাম ও কর্মের সার্থকতার তুলনা তিনি নিজেই। অসভ্য-বর্বর আরব জগতের তীব্র বিরোধিতার মাঝে এসে মাত্র দুই দশকের মধ্যে তিনি তাদের আমূল পরিবর্তনের বরপুরুষ হিসেবে আবির্ভূত হন। যেই আরব সমাজ ছিল তাঁর জানের দুশমন, তারাই অতি অল্প সময় বাদে তাঁর ত্যাগী অনুবর্তী হিসেবে নিজের সর্বাধিক প্রিয় জিনিস লোভনীয় জীবন বিলিয়ে দিতে দু’বার চিন্তা করত না তাঁর জন্যে। এমনই চরিত্র, এমনই জীবন তাঁর যে, আজো সমগ্র দুনিয়ার সকল দিগন্তে এ নাম উচ্চারিত হয়। কেউ ভক্তি ভালোবাসায়, কেউ নিন্দায় উচ্চারণ করে সেই নাম। নিন্দা যেন প্রকারান্তরে তাঁর মহিমাই বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। একজন অর্বাচীন নিন্দা করে তো দশজন প্রজ্ঞাবান ঘোষণা করে তাঁর অমিয় শান, অপরূপ মহিমা। আল্লাহর বাণী-আমি আপনার স্মরণ ও আলোচনাকে সমুন্নত করেছি-বারবার এটাই সত্য হয়ে ধরা দেয় ইতিহাসের বিচারে। ঈসায়ী সপ্তম শতাব্দীতে ইসলামের আবির্ভাব ছিল বিশ্ব-ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা বিস্ময়কর ঘটনা। অল্প সময়-মাত্র ২৩ বছরে নবীজীবনের ইসলামের মূল কা-ারী হযরত মুহাম্মদ (সা) যে অবিস্মরণীয় সাফল্য লাভ করেছেন, তা যেকোনো বিচারে অনন্যসাধারণ অর্জন। হাজার বছরের ব্যবধানে তাঁর আদর্শের স্থায়িত্ব ও বিশ্বসভ্যতায় তাঁর দুর্দমনীয় প্রভাব, যুগোপযোগিতায় তাঁর সমাধান, আধুনিকতায় তাঁর ব্যাখ্যা, বিজ্ঞানে তাঁর অর্জন, প্রজ্ঞায় তাঁর অধিকার, হৃদয়ে হৃদয়ে তাঁর আসন কোনোটাই ম্লান হয়ে যায়নি। কী মহিমা ছিল তাঁর জীবনে, কীভাবে তিনি এত শক্তিশালী, কেন তিনি আজো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তা চলমান গবেষণার বিষয়। বিশ্বব্যাপী তাঁকে নিয়ে যে উৎসাহ ও আলোচনা-তার ধারে কাছেও নেই অন্য কোনো ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। বিশ্ব ইতিহাস ও সাহিত্যালোচনায় স্বাভাবিকভাবেই হযরত মুহাম্মদ (সা) বহুমাত্রিকতার সাথে বিরাজমান। সেরকমই বাংলা ভাষায় আরেকটি প্রয়াস বিশ্বসাহিত্যে বিশ্বনবী।