রোহিঙ্গা নিপীড়িত ভূমিপুত্র
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরুর পর থেকেই কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের দিকে দেশবাসীর নজর। আরাকানে এসব মানুষের বসতঘর পোড়ানো, গুলি করে হত্যা, প্রকাশ্যে ধর্ষণ, শিশুদের আগুনে নিক্ষেপ করে হত্যার মতো লোমহর্ষক তথ্য গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা যাচ্ছিল। রাষ্ট্র নাগরিকদের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযান চালাতে পারে না। এটা মানবতাবিরোধী অপরাধ। জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংগঠন কিংবা বিশ্বের সভ্য দেশগুলোর আরও সক্রিয়ভাবে সোচ্চার হওয়া উচিত। বাংলাদেশ তো শুরু থেকেই সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটে যান উখিয়ায়। তিনি রোহিঙ্গাদের যেভাবে উষ্ণ হৃদয়ে বরণ করে নিয়েছেন, সেটা বিশ্বের অন্য কোনো দেশের নেতার পক্ষে অসম্ভব। বঙ্গবন্ধুর মতো বিশাল হৃদয়ের মানুষের কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষেই এটা সম্ভব। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে শরণার্থী গ্রহণ করছে না বা করতে চাইছে না, সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অশ্রসিক্ত নয়নে নিপীড়িত রোহিঙ্গা শিশু-নারীদের বুকে টেনে নিয়েছেন। শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নন, তাঁর বোন শেখ রেহেনাও রোহিঙ্গাদের বরণ করে নিয়েছেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথ ধরে পুরো বাংলাদেশই যেন স্রোতের মতো চলে আসে কক্সবাজারে। রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিকতা প্রদর্শনে বাংলাদেশ এতটুকু কার্পণ্য করেনি। অধিকন্তু তাদেরকে মায়ার জালে আবদ্ধ করে বিশ্বে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলা হচ্ছে। তরুণ সাংবাদিক এস এম রানা বাংলাদেশের উজ্জ্বল মানবতার দৃষ্টান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোর প্রয়াসে গ্রন্থটি লিখেছেন। তাঁর লেখনী মূলত একজন সংবাদকর্মীর দিনলিপি। দিনলিপির মধ্য দিয়েই তিনি পাঠককে নিয়ে গেছেন রোহিঙ্গা শিবিরে। বিশ্বের যেকোনো দেশে গিয়ে বাংলাদেশিরা প্রশ্ন করতে পারবেন, ‘মরণাপন্ন একটি জাতিকে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা ও আশ্রয় দিয়েছে কোন দেশ?’ এমন প্রশ্ন শুনে বিদেশিরা যখন হকচকিয়ে যাবে তখন বুকের ছাতি ফুলিয়ে প্রশ্নকর্তাই উত্তর জানাবেন, ‘বাংলাদেশ’। যদি এমনটা হয়, তবেই লেখক এস এম রানার এই প্রয়াস সার্থক হবে।