ভাষাকন্যা
প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল কৈশোরেই। রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য রাজপথে কি শুধু ছাত্রীরাই নেমে এসেছিলেন, রক্ষণশীল সমাজ ডিঙিয়ে মেয়েরা প্রকাশ্য প্রতিবাদে যোগ দিতে পারে নি? পাঠ্যবইয়ে ভাষা সৈনিক বা সংগ্রামী বলে যাদের সঙ্গে পরিচয়, সেখানে কোনো নারীর নাম ছিলনা। পরিবারে, সমাজে, শহীদ দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে, গণমাধ্যমে উচ্চারিত হয়নি কোনো ভাষাকন্যার নাম। কৈশোর না পেরোতেই হঠাৎ একজন ভাষাকন্যার সঙ্গে পরিচয়। প্রথম জানা হলো রাজপথে ছাত্রীরা নেমেছিলেন। প্রতিবাদ করেছিলেন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দাবির বিরুদ্ধে। তাঁরা ভেঙেছিলেন ১৪৪ ধারা। ঐ এক ভাষাকন্যাকে অবলম্বন করে এগিয়ে যাওয়া। পরিচয় হয়, আবিষ্কৃত হয় শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে নয়, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া মিছিলে সড়ক ও বিদ্যায়তন কাঁপিয়েছেন ভাষাকন্যারা। কোনো কোনো শহরে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা। এই ভাষাকন্যারা তাদের কাজের স্বীকৃতির দাবি নিয়ে পরিবারের কাছে, সমাজের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে গিয়ে দাঁড়াননি। তাঁরা ভেবেছেন সময়ের প্রয়োজনে নিজের দায়িত্বটুকু পালন করেছেন মাত্র। আর আমাদের দায় তাঁদেরকে উত্তরসূরিদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়া। তাই ১৯৯৬ থেকে তাঁদের খোঁজে।