নরঘাতী প্রেম
একটু সুখের আশায়, পরিবার-পরিজনকে ভালো রাখার জন্য অনেক বাংলাদেশি শ্রমজীবী প্রবাস জীবন যাপন করছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে শক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত। সেই প্রবাসীদের ঘরেই কোনো কোনো সময় ঢুকে পড়ে দুর্বৃত্ত। কখনো আত্মীয়স্বজন পরিচয়ে, কখনো-বা গৃহশিক্ষক বা পারিবারিক বন্ধু পরিচয়ে। এতে গৃহিণীরা কাবু হন বা কাবু করেন। দুই পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হয়। তারপর পারিবারিক বন্ধুর ছদ্মাবরণেই শুরু হয় প্রেম প্রেম খেলা। এই খেলা চলে লোকচক্ষুর অন্তরালে, আড়ালে আবডালে। এই খেলার দুই খেলোয়াড় বুঝেশুনেই বন্ধনহীন সম্পর্ক শুরু করেন। বলা চলে এ ধরনের প্রেমলীলার মূল আকর্ষণ শরীর। সামাজিক বন্ধনহীন শুধুমাত্র শারীরিক টানে তৈরি হওয়া সম্পর্কে এক সময় বিচ্ছেদ শুরু হয়। বিচ্ছেদ থেকে বিরহ বেদনা। আবার কখনো-বা ব্যাঘ্ররূপ ধারণ করে দানবীয় কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেন কেউ কেউ। যার শেষ পরিণতি দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও খুনোখুনি। সামাজিক ও ধর্মীয় বন্ধনহীন অসম সম্পর্কের জেরে পোড়ে একাধিক পরিবার। কখনো কখনো নিষ্পাপ শিশু-কিশোররাও খুনের শিকার হয়। এ থেকেই শুরু হয় মামলা এবং দৌড়াতে হয় আদালত-জেলে। মাঝপথে পারিবারিক-সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান নিঃশেষ হয়ে যায়। সমাজে পর্দার অন্তরালে চলমান অসংখ্য অসম প্রেমের কাহিনির ভেতর থেকে একটি কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসে। আশা করি উপন্যাসটি পড়ে পাঠকমহল চলমান সমাজব্যবস্থার একটি নেপথ্য চিত্র খুঁজে পাবেন। নিজেরা সচেতন হবেন এবং অন্যদেরও সচেতন করে তুলবেন যাতে কেউ সমাজবিরুদ্ধ পথে না হাঁটেন। অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিক ও লেখক এস এম রানা চলমান সমাজের অপরাধ গলিতে হেঁটে হেঁটে এই উপন্যাসের ঘটনাক্রম খুঁজে বের করেছেন। তাঁর বলিষ্ঠ লেখনীতে উঠে এসেছে সমাজের অন্ধকার গলির প্রকৃত অপরাধচিত্র। আমাদের সমাজে পর্দার অন্তরালে আসলে কী হচ্ছে, পাঠক তা খুঁজে পাবেন এই উপন্যাসে। আশা করছি, পাঠকমহলের হৃদয়গ্রাহী হবে নরঘাতী প্রেম নামক এই উপন্যাস।