Image Description

একজন ক্যাপ্টেন দত্তের তিন শতাব্দীর গল্প: ক্যাপ্টেন নরেন্দ্রনাথের জীবন-কথা [সম্পাদনা]

৳425
Format Paperback
Language Bangla
ISBN 978 984 20 0472-8
Edition 1st
Pages 208

বাংলার এই প্রান্তে বিশ শতকে মেধা ও কায়িক শ্রম কোনো কোনো ব্যক্তিকে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে যেতে পেরেছে, তার একটি উদাহরণ শ্রীকাইলের কৃতী সন্তান ক্যাপ্টেন ডাক্তার নরেন্দ্রনাথ দত্ত। ক্যাপ্টেন ডাক্তার নরেন্দ্রনাথ দত্তের জীবন ইতিহাস যেন এক রূপকথা। শিশুকাল থেকে নিজের শ্রমে উপার্জন, পরিবারে আর্থিক সহায়তা আর নিজের লেখাপড়ার খরচ চালানোসহ নানা বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সে উদ্দেশ্যে গ্রামের বাজারে মুদি দোকানে কাজ করেছেন, গ্রামের অন্য কৃষকের কামলাদের সাথে জমিতে নিড়ানির কাজ করেছেন। গ্রামের কৈবর্তদের সাথে থেকে জাল টানার কাজ করেছেন। কুমিল্লায় স্কুল ও কলেজে পড়ালেখার সময় শহরতলির গ্রাম থেকে শাকসবজি কিনে শহরের প্রধান তরকারি বাজার রাজগঞ্জে নিয়ে বিক্রি করে আয়ের মাধ্যমে লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময়েও খরচ চালাতে খিদিরপুর ডকে রাতভর জাহাজে মাল উঠানো ও জাহাজ থেকে মাল নামানোর মতো কঠোর শ্রমের কাজ করেছেন একাধারে সাত বছর। সামরিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন পদ থেকে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেন। নিজের অর্জিত অর্থে তিনি ব্যবসা করেছেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়েছেন। তিনি বেঙ্গল ইমিউনিটি কোম্পানির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের আরও ব্যবসা বাড়িয়েছিলেন যার মধ্যে ভারতী প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং কোম্পানি লি., নবশক্তি নিউজ পেপারস কোম্পানি লি., এস. এন্টুল এন্ড কোম্পানি লি. প্রভৃতি অন্যতম। বেঙ্গল ইমিউনিটি রিসার্চ ইন্স্টিটিউট পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠা করেন; ভারতে এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান এটিই প্রথম। তিনি অন্যকেও নানা ব্যবসায়ে পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। দেশে প্রথমবারের মতো বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ভাসিয়ে মাছ আহরণের মাধ্যমে তিনি ফিশিং ব্যবসা চালু করেন। অবিভক্ত বাংলায় ডেভেলপার হিসেবেও তিনিই পথিকৃৎ। তিনি নিজ গ্রামে পিতার নামে শ্রীকাইল কৃষ্ণকুমার উচ্চ বিদ্যালয় এবং কুমিল্লার গ্রামীণ এলাকার প্রথম কলেজÑশ্রীকাইল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। কলকাতা শহরতলির বরাহনগরেও একটি স্কুল ও ছাত্রাবাস চালাতেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই স্কুলটির নাম হয় নরেন্দ্রনাথ বিদ্যামন্দির। পরিচ্ছন্ন রাজনীতির আকাক্সক্ষা করেছেন জীবনভর। কংগ্রেসের রাজনীতিতে নেতাজীকে সহযোগিতা করেছেন নীরবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারে ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়ের প্রথম মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীর পদ গ্রহণের আহ্বান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বিনীতভাবে। শিক্ষার প্রতি ছিল তাঁর আজীবন দরদ। তিনি প্রত্যাশা করতেন, দেশের যুবসমাজ যেন প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করে। ক্যাপ্টেন দত্তের জীবনের এসব কথা পাওয়া যায় তাঁর সহাধ্যায়ী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডা. অমূল্যরতন চক্রবর্ত্তীর লেখা ক্যাপ্টেন নরেন্দ্রনাথের জীবন-কথা শীর্ষক বইয়ে। সমাজসেবায় ক্যাপ্টেন ডাক্তার নরেন্দ্রনাথ দত্তের অবদান, শিক্ষা বিস্তারে কলকাতা ও নিজ এলাকায় গড়ে তোলা তাঁর প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ও এগুলোর সর্বশেষ অবস্থা চিত্রিত করে বিস্তৃত ক্যানভাসে জয়নাল হোসেন নির্মাণ করেছেন একজন ক্যাপ্টেন দত্তের তিন শতাব্দীর গল্প। মহান সংগ্রামী, জনদরদি, আত্মোৎসর্গিত এ মনীষীর অনেক অজানা তথ্য আগ্রহী পাঠকের কৌতূহল নিরসনের জন্য এই বইয়ে তুলে ধরায় জয়নাল হোসেন ধন্যবাদার্হ হয়েছেন। আব্দুল কাইয়ুম সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো, ঢাকা।

Jaynal Hossain / জয়নাল হোসেন

জয়নাল হোসেন একজন কৃষিবিদ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। কুমিল্লার মুরাদনগরের কুড়েরপাড় গ্রামে ১৯৫৩ সালের ১১ই আগস্ট তাঁর জন্ম। পিতা তালেব হোসেন, মাতা মাফেজা খাতুন। বাঙ্গরা উমালোচন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে এসএসসি, শ্রীকাইল কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে এইচএসসি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে ১৯৭৭ সালে কৃষি অনুষদ থেকে ডিগ্রি নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। চাকরিকালে থাইল্যান্ডের মহিডোল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অভ নিউট্রিশন থেকে পুষ্টির ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। তিনি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ এর জীবন সদস্য এবং বাংলাদেশস্থ জাতিসংঘ সমিতির সদস্য। তাঁর রচিত বই: মুর্শিদাবাদ থেকে মধুপুর (২০০০), প্রমিত দৃষ্টিপাত (২০০১), সমুদ্রনন্দিনী কুতুবদিয়া: ইতিহাস ও বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত (২০০২), ঠাকুর শম্ভুচাঁদ (২০০৩), শৈলসমুদ্র সান্নিধ্যে (২০০৩), মেঘের মায়াবী চোখ (২০০৭), রাজা ভাওয়াল সন্ন্যাস ও ভাওয়াল পরগনা (২০০৯), পুণ্যের ঘরে শূন্য দিয়ে: ব্যতিক্রমী আট (২০১২), ধীরাজ ভট্টাচার্য ও তাঁর প্রেম উপাখ্যান: মাথিনের কূপ (২০১২), মানবপুত্র গৌতম: ধর্ম ও জীবনাচার (২০১৩), উইলে চার টাকা দুই আনা: সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভিতর-বাহির (২০১৩), প্রাঙ্গণে মোর: টোকা ডায়েরির পাতা থেকে (২০১৪)