বাংলাদেশের জেলা পুলিশ : অবকাঠামো এবং ব্যবস্থাপনা, উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ (১৮৬১-১৯৪৭)
সভ্যতার সেই ঊষা লগ্ন থেকে সবদেশেই অভ্যন্তরীণ শান্তি তথা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এক শ্রেণীর তুলনামূলকভাবে শক্ত-সমর্থ দেহী লোকজন কাজ করত। দেশ ও স্থান বিশেষে এদের নাম ছিল বিভিন্ন। কালক্রমে মূলত ‘পুলিশ’ নামেই এরা রাষ্ট্রের একটি নিয়মিত ও অপরিহার্য প্রশিক্ষিত বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। আবহমান বাংলাও এর ব্যতিক্রম নয়। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এ দেশেও পুলিশ বাহিনী গড়ে উঠেছে। বলা বাহুল্য মোগল-নবাবি যুগের ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোর সঙ্গে এর কিছু পদ-পদবির সাদৃশ্য থাকলেও অবিভক্ত বা অখণ্ড বাংলায় আধুনিক পুলিশের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ ইংরেজ আমলেই হয়েছিল। উপমহাদেশীয় প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে বাংলায় আধুনিক পুলিশের অগ্রযাত্রা ১৮৬১ সালে ‘পুলিশ আইন’ প্রণয়ন ও প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে; সময়ের অনিবার্য প্রয়োজনে নানা সংযোজন-বিয়োজন তথা এককথায় পরিবর্তন ও সংস্কার-পুনঃ সংস্কারের ফল আজকের পুলিশিব্যবস্থা বা ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো। ১৮৬৩ সাল থেকে ১৯৪৭ এর দেশবিভাগকাল পর্যন্ত পূর্ববাংলার তথা আজকের বাংলাদেশের বৃহত্তর জেলাগুলোতে পুলিশি অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা বিশেষত থানাগুলো কীভাবে এবং কোন্ সব আদেশে একটি থেকে ভেঙে বা অন্যটির সঙ্গে জুড়ে গঠিত হয়েছিল, বহু ঘাত-প্রতিঘাত সহে উনিশ শতক পর্যন্ত জেলা পুলিশের শীর্ষ পদে কারা অধিষ্ঠিত থেকে বাহিনীটিকে একটি দৃঢ় ও স্থায়ী ভিত্তি দিতে ভূমিকা রেখেছিলেন সেসব ঐতিহাসিক খুঁটিনাটি তথ্য সহ অনুরূপ নানা বিষয় উঠে এসেছে গ্রন্থটিতে। বৃহত্তর বাংলা তো বটেই, ব্রিটিশ ভারতের অন্য কোনো একক প্রদেশ নিয়ে এ জাতীয় কোনো গ্রন্থ বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় এখন পর্যন্ত প্রণীত হয়েছে বলে জানা যায় না।