পূর্বের চোখ পশ্চিমের মন
এরিক ইমদাদ ঘুরেছেন টরান্টোর আনাচে কানাচে। পেশাগত সূত্রে মিশেছেন সমাজের নানা ধরনের নানা সংস্কৃতির লোকজনের সাথে। একুশ শতকের আজকের টরান্টো পৃথিবীর সবচে বহুধা বিস্তৃত শহর। জাতিগত ও ভাষাগত বৈচিত্রের দিক থেকে টরান্টো পেছনে ফেলে এসেছে লন্ডন, নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, সিডনী ও মায়ামী শহর। এই মেগাসিটির চালচিত্র, নানান চমকপ্রদ দিক বন্দী করেছেন তার শব্দমেলায়। ফ্যাক্টস এবং ফিগার নিয়ে খেলতে ভালোবাসেন এরিক। শুষ্ক পরিসংখ্যান তার লেখনীতে হয়ে ওঠে জীবন্ত। তথ্য থেকে বের করে আনতে জানেন অনেক মজার বিশ্লেষন। এরিক ইমদাদের লেখায় গদ্যের পাশাপাশি এসেছে কাব্য আর বাস্তব সব ঘটনা বিবৃত হয়েছে কাল্পনিক চরিত্রের ছায়ায়, আড্ডা আর গল্পের আদলে। মানব মানবীর সম্পর্ক, ভাষা-সংস্কৃতি, টরান্টোর ইতিহাস, অর্থনীতি, আয়-বৈষম্য, ক্রেতা সমাচার, চাকুরীর বাজার, ব্যবসা বাণিজ্য, এবং জীবন ধারার নানান দিক মেলে ধরেছেন নানান দৃষ্টিকোন থেকে। তীব্র কৌতূহল নিয়ে ঢুঁ মেরেছেন গ্রীক টাউন, লিটল ইটালী, পর্তুগীজ ভিলেজ, ক্যাবেজ টাউন, চায়না টাউন, ইন্ডিয়া বাজার এবং অতিসম্প্রতি গড়ে ওঠা বাংলা টাউন। আবিস্কার করেছেন নৈশ নিসর্গের এক অপরচিত্র। কিছু কিছু পৃষ্ঠা বা পর্ব হয়তো বাদ পড়ে গেছে। তবুও সুখপাঠ্য বর্ণনায় ধরা পড়েছে এক অস্পষ্ট শহরকে ক্রমশ চিনে ওঠা। পূর্বের ক্যামেরা প্যান করে দূরের কোন কোন দৃশ্যকে কাছে টানার কাজটি করতে চেয়েছেন এরিক। ককেসিয়ান, মঙ্গোলয়েড, অনার্য-দ্রাবিড়, ক্যারাবিয়ান, ল্যাটিন আমেরিকান, আফ্রিকান বিবিধ সম্প্রদায়ের সম্মিলিত স্বপ্নের শহর টরান্টোকে নিয়ে লেখা এই উপভোগ্য বইটি সমৃদ্ধ করবে পিপাসু পাঠকের মন।