অবণাগবণ
চর্যাগীতির পাঠরীতি, গীতরীতি, নৃত্যরীতি, নাট্যরীতি নেপালের জীবন্ত সংস্কৃতির অংশ। চর্যাগীতির অন্যতম জন্মভূমি ও প্রাচীন চর্চাক্ষেত্র বাংলাদেশ। কিন্তু এদেশে আজ আর কোথাও চর্যার কোনো পরিবেশনারীতির সন্ধান মেলে না। সাইমন জাকারিয়া দীর্ঘদিনের সাধনায় প্রাচীন চর্যাপদের সমকালীন বাংলাভাষায় রূপান্তরিত গীতবাণী সংকলন করেছেন। ‘অবণাগবণ’ অর্থ আসা-যাওয়া, অর্থাৎ চর্যার ভাবসম্পদ আমাদের চেতনার মধ্যে যুগ যুগ ধরে নিঃশ্বাসের মতোই আসা-যাওয়া করেছে, কিন্তু আমরা জগত-সংসারের স্থূল ও বস্তুগত চাহিদার নেশায় মেতে তা অনুভব করতে পারছি না। চর্যাপদের এই রূপান্তরিত গীতবাণীগুলো মূলত একজন সৃজনশীল, ভক্তি-ভাববাদী ও স্বভাব-সংগীতকার লেখকের অন্তরজাত অভিজ্ঞতার আলোকে রচিত। তাই এতে আধুনিককালের প্রচলিত কাব্যিক ছন্দ কাঠামো এবং মূল চর্যাপদের সুসংঘবদ্ধ বাণীবিন্যাস-কাঠামোও অনেক ক্ষেত্রে রক্ষিত হয়নি। তবে, গানের সুরের আবহে পদগুলো পাঠ বা গীত করলে পাঠক ভিন্নতর আনন্দ খুঁজে পেতে পারেন। আর এই অনুভবে প্রাচীন চর্যাপদের সমকালীন বাংলায় রূপান্তরিত গীতবাণীকে গ্রহণ করে নিতেই পাঠক-গবেষক-সঙ্গীতপিপাসুদের প্রতি গ্রন্থকারের সবিনয় অনুরোধ।