অর্ধেক রয়েছি জলে অর্ধেক জালে
এই শহরের সবুজ চুলে জরির ফিতার মতো জড়িয়ে আছে কর্ণফুলী। বেখেয়ালে যেখানে সে মোচড় কেটেছে (পশ্চিম মাদারবাড়ি), সেখানে আমার জন্ম, আমার শৈশব। শহরের মাঝখানে হঠাৎ বিশ্রামের নিঝুম এই এলাকা। বাড়ির পাশেই যুগীচাঁদ মসজিদের দীঘি, মক্কাবাগিচার গহন সবুজ, নির্জন পুকুর পড়ে- থাকা ছোঁড়া জাল - জ্যোৎস্না। অদূরে পরীর পাহাড়। জোয়ারের জলে রাস্তায় ছিটকে- পড়া মাছ। কর্ণফুলীর হাত ধরে বঙ্গোপসাগর, সে-ই আমাকে আকাশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। এই সবে মগ্ন ছিলো আমার শৈশব। শ্যাওলার নিদ্রা ভেঙে বহু আগে জলজ উত্থান। অথচ, আগন্তুক ভ্রমণের ছলে সমুদ্রজননীকে দেখে দেখে আসি। রক্তে রয়ে গেছে তিনভাগ জলের কল্লোল। জোয়ারের ছদ্মবেশে নদী-সমুদ্র - এরা আমাকে খুঁজতে বেরিয়েছে। আমি জীবনের জালে আটকা-পড়া মৎস্যকুমার। আজও আমার ফিরে-যাওয়া হলো না, এমনকি নিজের কাছেও। আমার শিকড় জলে, ডালপালা ভাঙায়। জল আর মৃত্তিকায় দ্রবীভূত অন্য এক জীবন আমার। হে কবিতা, তুমি আমার সমস্ত আনন্দ সমস্ত যন্ত্রণা গ্রহণ করো।