দৈত্য পাহাড়ের ক্ষুদে মানুষ
কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ হওয়ার আগে রাঙ্গামাটি কেমন ছিল? এক কথায় অপূর্ব। বর্ষাকালে একটানা পাঁচ-ছয় দিন বৃষ্টি চলছে তো চলছেই। সূর্য ওঠার আর সুযোগ পায় না। পাহাড়ের ওপর অজস্র সুতোর মতো বৃষ্টি ঝুলে থাকত। আকাশ যেন বৃষ্টির রুপোর সুতো দিয়ে পৃথিবীকে টেনে তুলছে। যেন বৃষ্টির বাড়ির ভিতরে পৃথিবী; ফুলে ওঠা বৃষ্টির বাড়িতে ভিজতে ভিজতে অলস আয়েসে সে যেন ঘুমুচ্ছে। সেখানে একটি ছোট পাহাড়ে থাকত পাঁচ আঙুলে ক্ষুদে মানুষ। ওদের জন্ম ইতিহাস খুব প্রাচীন। প্রাচীনকালে এশিয়া মহাদেশে হিমালয়ের উত্তরে ওদের পূর্বপুরুষ দেবতারা বাস করত। তাদের রাজার নাম ছিল খুর। ছোট হলেও তার ক্ষমতা ছিল অসীম। জাপান, আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়ায়- সর্বত্র ওরা আছে, কিন্তু সংখ্যায় কম। রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বনের দৈত্য পাহাড়ে ওদের সঙ্গে আমার দেখা। লেটুস, চন্দন, গর্জন, বকুলমালার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেল। গাছ, ফুল, লতাপাতার নামে ওদের নাম হয়। মাটির নিচে ওদের রাজত্ব। ওরা বিদ্যুতের ব্যবহার জানে। ছুটতে পারে দ্রুত- চোখের পলকে। নিজেদের সম্পর্কে খুব সচেতন। অসাধারণ সৌন্দর্য চেতনা। ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলতে চায় পৃথিবীকে। মানুষকে সৎশিক্ষা দিতে চায়। প্রত্যেক পূর্ণিমায় ওদের উৎসব হয়। সেই ক্ষুদে মানুষের অসামান্য কাহিনী এটি। মন দিয়ে, চোখ খুলে পড়ার আর হৃদয়ের অনুভূতিতে সঞ্চারিত হওয়ার মতো বই। বাংলা সাহিত্যে রাঙ্গামাটির পটভূমিতে এই প্রথম সাহসিক উপন্যাস।