জাতক সন্দর্শন: প্রাচীন ভারতের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট
জাতক সাহিত্য পৌরাণিক বিষয়। ভগবান বুদ্ধের পূর্বজন্মের বৃত্তান্তই জাতকের আলোচ্য। বৌদ্ধ ঐতিহ্যমতে এগুলো কল্পিত কাহিনী নয়, বুদ্ধের বোধিসত্ত্বাকালীন জীবনের ইতিকথা মাত্র। জাতকের মৌল উপাদান গৌতম বুদ্ধের উপদেশনা। তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্যদের কাছে উপদেশনাকালে আলোচ্য বিষয়ের সরলীকরণের জন্য জাতক কাহিনীর অবতারণা করতেন। বুদ্ধের এই কাহিনীগুলো নৈতিক জ্ঞানার্জনের এক অনন্য সম্পদরূপে মূল্যায়িত। তাই জাতকের উৎস ধর্মশাস্ত্র হলেও প্রাচীন জীবনধারার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও তত্ত্ব এতে অঙ্গীভূত। শুধু নীতিকথা নয়, জাতকে এই উপমহাদেশের তথা প্রাচীন ভারতের ভূগোল, আর্থ-সামাজিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বহুমাত্রিক পরিচয়ও পাওয়া যায়। এক কথায়, রাজা-মহারাজা থেকে ব্রাত্যজনের যাপিত জীবনের সংস্কার-সংস্কৃতির সাথে পশু-পাখি ও পরিবেশ প্রসঙ্গে অমূল্য কথা জাতকে উপজীব্য হয়ে আছে। জাতক সন্দর্শন-এ সুমন কান্তি বড়ুয়া ও শান্টু বড়ুয়া জাতক কাহিনী পর্যালোচনা করে এর অন্তর্নিহিত নানা দিক তুলে ধরতে গিয়ে উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর প্রতি আলোকপাত করেছেন। জাতকের কাহিনী নিয়ে এ ধারার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণসমৃদ্ধ গ্রন্থ রচনার প্রয়াস বাংলা সাহিত্যে বিরলই।