ইংরেজ আমলে বাংলার প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস : ১৭৬৫-১৯৪৭
ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ঈস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও ওড়িশার ‘দিওয়ানি’ লাভ করে। যদিও সাধারণ প্রশাসন পরিচালনার ভার তখনও ছিল নবাবেরই হাতে। কিন্তু নেপথ্যে থেকে ‘পলাশির যুদ্ধের ইংরেজ কুশীলবেরাই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছিল। ইংরেজরা পরীক্ষামূলকভাবে ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম জেলাগুলোর দয়িত্বে নিজেদের লোক নিযুক্ত করে, এদের পদবি ছিল ‘সুপ্রাভাইজর’/‘সুপারভাইজর’। ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে এটাকে পাল্টে করে ‘কালেক্টর’। পরবর্তীকালে ‘কালেক্টর’দেরকে প্রত্যাহার করে সে পদে দেশি ‘আমিল’দের বসিয়েছিল। কিন্তু নিজেদের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে ইংরেজ কালেক্টরদেরকেই ফিরিয়ে আনে। মোটামুটি ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ বর্তমান জেলা প্রশাসন তার পূর্ণাঙ্গ রূপ ও চরিত্র পেয়েছিল। ওয়ারেন হেস্টিংস, মার্কুইস, কর্নওয়ালিস এবং অন্যরা বিদ্যমান জেলাগুলোকে বিন্যাস-পুনর্বিন্যাসের মধ্য দিয়ে বৃহত্তর বাংলার জেলা প্রশাসনের যে মজবুত অবকাঠামো দাঁড় করিয়েছিলেন, বস্তুত তারাই ধারাবাহিক ইতিহাস বা ক্রমবিকাশের চিত্র উঠে এসেছে বর্তমান গ্রন্থে। সেই সঙ্গে রয়েছে ‘ফোর্ট ইউলিয়াম’কেন্দ্রিক ‘কলকাতা কাউন্সিল’ ও ‘সিলেক্ট কমিটি’ তথা মূল ক্ষমতা বলয় ও এর অন্তরবর্তী প্রশাসনিক দপ্তর/সংস্থাগুলোর বিবর্তনের কাহিন।