পদাবলী সাহিত্যের উদ্ভব ও বিকাশ
পদ সাহিত্য সবচেয়ে পুরনো এবং আধুনিকও। পদ অর্থ ‘কথা’ ও ‘সঙ্গীত’। বাদ্যযন্ত্রাদিতে সুর তাল লয় সৃষ্টি করা যায় কিন্তু কী ভাবের অভ্যন্তর থেকে প্রকাশিত হবে তা অনুধাবন করার জন্য পদ প্রয়োজন। বাংলা কবিতায় চর্যাপদ, বৈষ্ণব পদাবলী থেকে শুরু করে আধুনিক রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত এই আবেষ্টনীতে বাঁধা। এ ধরনের সৃষ্টি নাম ‘পদ বাঁধা’ বা ‘গান বাধা’। তাই পদকর্তারা একাধারে সুরশিল্পী এবং গায়কও বটেন। এই পদ সাহিত্যের অন্যান্য শাখার সঙ্গে সমন্বয়যুক্ত নয়। মহাকাব্য, কাহিনীকাব্য, খণ্ডকাব্য বা উপন্যাস-ছোটগল্পের কোনও গুণ পদে নেই। এগুলোর মতো নেই পদের ভার ও বিশালতাও। এটি যেন-বা পালকের ওপর খচিত হালকা কথার রেশ, অথচ দেশ-কালের সব গণ্ডি ছাড়িয়ে যার অবাধ গতিবিধি, চিরন্তনরূপে তা বিরাজিত। বাংলা পদাবলী কেবল বৈষ্ণব পদ নয় এই কথাটি পরিস্ফুট করতে এ গ্রন্থের অবতারণা। এই বাংলা পদাবলীসাহিত্যে বৈষ্ণব পদাবলী বা ভক্তিভাব ছাড়াও যে অন্যান্য পদ সন্নিবেশিত সেই প্রসঙ্গে অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছেন শামসুল আলম সাঈদ এই গ্রন্থটিতে। মধ্যযুগের সাহিত্য প্রসঙ্গে তিনি ব্যাপক ও গভীর তথ্য ও তত্ত্ব এতে উপস্থাপন করেছেন।