Image Description

দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়ন ও সাম্প্রদায়িকতা

৳130
Format Paperback
Language Bangla
ISBN 984 8193 26-X
Edition 2nd
Pages 128

বিশ্বায়নের যুগে ছোট হয়ে এসেছে পৃথিবী। পৃথিবী এখন নেহাৎই একটি গ্রাম। বিশ্বায়ন বিশ্বকে ছোট করে আনলেও বিস্তৃত করেছে অপরাধবৃত্তিকে। দুর্বৃত্তপনাকে। রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রপরিচালনা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সর্বত্র বিস্তৃত হয়েছে এই দুর্বৃত্তায়ন। বিশ্বের একটি ছোট, দারিদ্র ও পিছিয়ে পড়া দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই দুর্বৃত্তায়নের একটা মডেলে পরিণত হয়েছে। দুর্বৃত্তরা এখানে সব রকম অপকর্ম যেমন করছে, আবার তারাই অপকর্মের বিরুদ্ধে নসিহতও ঝাড়ছে। এ এক বিচিত্র ঘৃণ্য অসহনীয় দুর্গন্ধময় অবস্থা। বিশিষ্ট রাজনীতিক রাশেদ খান মেনন তাঁর দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়নও সম্প্রদায়িকতা’ নামের এই বইতে সেই নোংরা, কুৎসিত, ভয়াল চেহারার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন। রাশেদ খান মেননের রাজনীতি ও সমাজভাবনার সঙ্গে সবাই নিশ্চয়ই একমত হবেন না, কিন্তু আমাদের চারপাশে ঘটিত ও ঘটমান অসংখ্য ঘটনা নিয়ে তাঁর লেখা থেকে ভাবনার নব নব দিগন্তের সন্ধান মিলবে, এ নিয়ে নিশ্চয়ই কারও কোনো দ্বিমত থাকবে না।

Rashed khan Menon / রাশেদ খান মেনন

রাশেদ খান মেনন রাজনীতিক হিসেবে সর্বজনপরিচিত। সম্প্রতি লেখালেখির জন্যও তিনি বিশেষ পরিচিতি পেয়েছেন। ছাত্রআন্দোলনের প্রচারপত্র, বিবৃতি আর বিভিন্ন সংকলন প্রকাশের মধ্য দিয়ে এই লেখার শুরু। রাজনীতির প্রয়োজনেই বিভিন্ন বিষয়ে লিখেছেন তিনি। এখন জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিকগুলোতে নিয়মিত লিখে চলেছেন। সেসব লেখা নিয়ে ইতোমধ্যে তিনিটি বইও প্রকাশিত হয়েছে। বিচারক পিতা মরহুম বিচারপতি আবদুল জব্বার খানের সে সময়ের কর্মস্থল ফরিদপুরে 1943-এর 18 মে তার জন্ম। শৈশব কেটেছে বিভিন্ন জেলা শহরে। পরে ঢাকায় এসে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ‘58-তে ম্যাট্রিক, ঢাকা কলেজ থেকে ‘60 সালে আই. এ. ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হল থেকে ‘63তে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ও ‘64 তে রাজবন্দি হিসেবে জেলখানা থেকে পরীক্ষা দিয়ে এম. এ. পাস করেছেন তিনি। আইন পড়ার জন্য ভর্তি হলেও শেষ করা হয়নি। ষাটের দশকে ছাত্রআন্দোলনের নেতা রাশেদ খান মেনন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক, সহ-সভাপতি ও দু’দফায় সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ ডাকসুর সহ-সভাপতি ছিলেন 1963-’64 বর্ষকালে। আয়ুবের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে জেল খাটা শুরু। ছাত্র আন্দোলনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃতও হন। ইয়াহিয়ার সামরিক শাসনামলে 1970-এর 22 ফেব্রুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলার আন্দোলনের কর্মসূচি তুলে ধরায় সামরিক আদালতে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ ও সম্পত্তির ষাটভাগ বাজেয়াপ্তের হুকুম হয়। আত্মগোপনে যাওয়ার কারণে এ দণ্ডাদেশ ভোগ করতে হয়নি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ‘বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি’ করে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করে মুক্ত স্বাধীন দেশে মুক্তজীবনে ফিরে আসেন তিনি। সেই বাংলাদেশেও এরশাদের সামরিক শাসনের বিরোধিতা করায় তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বন্দি থাকতে হয়। ছাত্রজীবনের পর মওলানা ভাষানীর হাত ধরে কৃষক আন্দোলন ও জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ। ছাত্রজীবনেই গোপন কমিউনিস্ট পার্টির কাছে কমিউনিজমে দীক্ষা। কমিউনিস্ট আন্দোলনের মস্কো-পিকিং বিভক্তিতে পিকিংপন্থীর কাতারে পড়ে যান। কিন্তু অচিরেই এ দেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনকে স্বাধীনভাবে সংগঠিত করতে প্রথমে ‘কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ববাংলা সমন্বয় কমিটি’, বাংলাদেশ পরবর্তীতে ‘বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি’ (লেনিনবাদী), পরে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সংগঠিত করেন। পার্টির গোপন অবস্থায় প্রথমে ভাসানী ন্যাপের প্রচার সম্পাদক, পরে ইউপিপি’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করেন। পার্টি সম্পূর্ণ প্রকাশ্যে এলে তিনি প্রথমে ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, পরে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি নির্বাচিত হন। কৃষক আন্দোলনের সফল সংগঠক রাশেদ খান মেনন মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে পাকশী, মহীপুর ও সন্তোষের ঐতিহাসিক কৃষক সম্মেলন ও সমাবেশের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন কৃষক সমিতির দপ্তর সম্পাদক ও পরে কৃষক মুক্তি সমিতির সভাপতি ছিলেন। রাজনীতির কারণে দু’বার তার জীবননাশের চেষ্টা হয়। দেশের মানুষের ভালোবাসায় জীবনে ফিরে এসে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। 1979 ও 1991-এর নির্বাচনে তিনি দু’বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং সংসদের পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেন। তার ছাত্রআন্দোলনের সহকর্মী লুৎফুননেসা খান বিউটি তার স্ত্রী। কন্যা সুবর্ণা আফরিন খান, পুত্র আশিক রাশেদ খান।