দারিদ্র্য ও পরিবেশ
সিন্দু নদের উপত্যাকায় গড়ে উঠেছিল ভারতবর্ষের প্রাচীনতম সভ্যতা। জনপদগুলো ছিল বালুকাময়। এ সময়ের সবগুলো জনপদই গড়ে উঠেছিল মরুভূমির বালুকাময় নদীর তীরে। কারণ, পানির উৎস ও খাদ্যের সহজ প্রাপ্তি। সিন্দু সভ্যতার অধিবাসীরা ছিল কৃষক। কিন্তু তাদের কৃষিকাজে লাঙলের ব্যবহার ছিল না। তারা জানত সেচ ব্যবস্থা। সিন্ধু সভ্যতার বণিকরা খাল খনন করে যেত মেসোপটেমিয়াতে। সেখানে লাঙলের ব্যবহার চালু ছিল। এই সভ্যতায় ছিল পুরোহিত, বণিক ও কৃষক। শুধু কৃষকরাই ছিল উৎপাদক শ্রেণী। তারা বাড়তি উৎপাদন করত পুরোহিত ও বণিকদের জন্য। গাঙ্গেয় উপত্যকায় অনার্য জনপদগুলোয় আর্যরা প্রবেশ করে উর্বর কৃষি ক্ষেত্র দখল করে। কৃষি অর্থনীতিতে গড়ে ওঠে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকানা। অর্থাৎ কৃষকের শ্রমের উপর শক্তিধরের দখল। কৃষি সভ্যতা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মানুষ। কারণ, শিকারিদের অপেক্ষা কৃষকরা দশ গুণ বেশি মানুষের জন্য আহার যোগাড় করতে পারত। শিকারিরা ছিল যাযাবর। আর কৃষকরা ছিল স্থঅয়ী বাসিন্দা। স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপনকারিদের হাতে লাঙল ভিত্তিক কৃষি সভ্যতার সূচনা ঘটে। শিকারিরা ছিল খাদ্য সংগ্রহকারি। কৃষিজীবীরা ছিল খাদ্য উৎপাদক। তারাই সৃষ্টি করেছে উদ্বৃত্ত সম্পদ। কৃষক বনভূমি পরিষ্কার করে কৃষি জমির পত্তন করতে চেয়েছে। কৃষির আবিষ্কার মানব সভ্যতার যুগান্তকারি ঘটনা। এ কৃষকরাই হচ্ছে সভ্যতার স্রষ্টা, যুদ্ধে বিজয়ী এবং শক্তিমান। তারাই ইতিহাসের সবচেঃেয় টেকসই ধারাবাহিক মানুষ।